Porjotonlipi

জৈন্তাপুর শাপলা বিল

জৈন্তাপুর শাপলা বিল সিলেটের বেশ সুন্দর একটি ভ্রমণ স্পট। সিলেটের অন্যান্য ভ্রমণকেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি সিলেটের বিলগুলোও বেশ বিখ্যাত এবং জৈন্তাপুর উপজেলা সেরকমই একটি জায়গা। সিলেটের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত পান-পানি-নারী খ্যাত জৈন্তাপুর উপজেলা।

দৃষ্টিনন্দন জৈন্তাপুর শাপলা বিল

এ উপজেলায় প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে ভরপুর। জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবির হাওর, কেন্দ্রীয় বিলসহ রয়েছে চারটি বিল। বিলগুলোকে কেন্দ্র করেই নাম করা হয়েছে ডিবির হাওর।

জৈন্তাপুর উপজেলার ইতিহাস 

স্বাধীন জৈন্তারাজ্যের রাজা বিজয় সিংহের সমাধিস্থল। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ব্রিটিশ শাসিত ভারত উপমহাদেশের শেষ স্বাধীন রাজ্য ছিল জৈন্তাপুর। শ্রীহট্ট তথা ভারতবর্ষের অধিকাংশ এলাকা তখন মোঘলসাম্রাজ্যের। তখনও জৈন্তিয়া তার পৃথক ঐতিহ্য রক্ষা করে আসছিল। প্রায় ৩৫ বছর স্বাধীন রাজ্য হিসেবে পরিচালিত হয়। রামায়নেও জৈন্তিয়া রাজ্যের অনেক উল্লেখ আছে।

সৌন্দর্যে জৈন্তাপুর শাপলা বিল

প্রতিদিন ভোরে এখানে ফুটে ওঠে অপূর্ব অগণিত ফুল, তাদের সাথে দেখা করতে প্রতিদিন ভোর হওয়ায় সাথে সাথেই দলবেধে নৌকায় ভেসে বেড়ান অগণিত ভ্রমণপিয়াসু। যেহেতু শীতকাল তাই নানা ধরণের পাখির দেখাও পাবেন আপনি এখানে। প্রতিবছর অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে এই ডিবির হাওরে। ভোরের লাল শাপলা, পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য্যে, সাথে পাখির কিচির মিচির- এ যেন আসলেই এক প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য। সাথে বাড়তি আকর্ষণ হলো হাওরের পারেই পাহাড়ের সারি। ভারতের মেঘালয়ের সেই পাহাড় যেন মনে হয় আরেক স্বর্গ। 

১৮৩৫ সালের ১৬ মার্চ হ্যারি নামক ইংরেজ রাজেন্দ্র সিংহকে কৌশলে বন্দি করে সব লুট করে নেয় রাজা বিজয় সিংহের রাজ্য থেকে। এই রাজ্যেরই স্মৃতি বিজড়িত ডিবির হাওর। পরে সেখানেই তার সমাধিস্থল হয়ে ওঠে। তাছাড়া এখানে রয়েছে প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন এক মন্দির। ইতিহাস থেকে জানা যায় জৈন্তার এক রাজাকে এখানে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়। তার স্মৃতিতেই এই মন্দির তৈরী হয়।

কিভাবে যাবেন শাপলা বিল

সিলেট শহর থেকে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ থেকে, উত্তর সুরমার সোবহানীঘাট কিংবা টিলাগড় পয়েন্ট থেকেও জাফলংগামী বাস পাবেন। বাসটি জৈন্তাপুর বাজার হয়ে যাবে। আপনাকে সেখানেই নামতে হবে। লোকাল বাস ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা নিবে।

রাস্তার বিজিবি ক্যাম্প লিখা সাইনবোর্ডের ডান পাশের রাস্তা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাটলেই পেয়ে যাবেন লাল শাপলার বিল।

 

তাসনিয়া মাহবুব তৈশী

Add comment