কক্সবাজারে যেকয়টি দ্বীপ রয়েছে, তার মধ্যে সোনাদিয়া দ্বীপ অন্যতম। ক্যাম্পিং করার জন্য প্রসিদ্ধ এই দ্বীপ পর্যটকদের পদচারনায় মুখর থাকে বারোমাস, তবে শীতকালে এই চেহারা পাল্টে যায়।
অপরূপ সোনাদিয়া দ্বীপ
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার অপূর্ব সুন্দর একটি দ্বীপের নাম সোনাদিয়া। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিনে এই সোনাদিয়া দ্বীপের অবস্থান। ত্রিমুখী বেলাভূমি আর লতায় মোড়ানো সবুজ বন এই সোনাদিয়া দ্বীপের সৌন্দর্যে যোগ করেছে এক অপরুপ মাত্রা। এই সৌন্দর্যবর্ধনে আরেকটি নাম যোগ হয়, সেটি হল লাল কাঁকড়ার ঝাঁক, যেগুলো সকাল হলে রোদের তাপে গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে ভেজা বালুমাটিতে অবাধ চলাফেরা করে।
কিভাবে যাবো সোনাদিয়া দ্বীপ
ঢাকা থেকে কমলাপুর, সায়েদাবাদ, কল্যানপুর, এবং দেশের যেকোনো জায়গা থেকে বাস, ট্রেনে করে আগে যেতে হবে কক্সবাজার, এসি/নন-এসি বাসের ভাড়া পরবে কমবেশি ৮০০-১২০০ টাকা; ট্রেনের ভাড়া নির্ভর করবে কিরকম ট্রেনে যাবেন, সেটার ওপর। কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্ট অথবা কলাতলী পয়েন্ট থেকে কক্সবাজারের ৬নং ঘাট যেতে হবে, যেখান থেকে মহেশখালী যাওয়ার স্পীডবোট রওনা করে, জনপ্রতি ভাড়া ৭৫ টাকার মত।
মহেশখালী ঘাট থেকে রিকশায় গোরকঘাটা বাজার, ভাড়া ২০ টাকা, গোরকঘাটা থেকে ২৪ কিলোমিটারের দূরত্বে ঘটিভাঙা, সিএনজি করে গেলে ভাড়া পরবে ২০০ টাকার মত। ঘটিভাঙা থেকে বোটে করে সোনাদিয়া যাওয়া যায়, মাথায় রাখতে হবে এই বোট শুধুমাত্র জোয়ারের সময় দিনে সকাল ৯-১১টা এবং দুপুর ২-৪টা এই সময়ে চলে। ৪০ মিনিটের মত যাত্রা পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় সোনাদিয়া। সোনাদিয়া ঘাট থেকে ১০-১৫ মিনিটের হাটার দুরত্তে রয়েছে সোনাদিয়া দ্বীপ।
যারা ভ্রমনে অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসেন, তারা স্পীডবোটে করেও সোনাদিয়া দ্বীপ চলে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে গুণতে হবে অতিরিক্ত অর্থকড়ি।
চাইলে সরাসরি সড়কপথেও সোনাদিয়া দ্বীপ চলে যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে কক্সবাজার যাওয়ার পথে চকরিয়া নামতে হবে, সেখান থেকে জীপ/সিএনজি করে বদরখালি, সেখান থেকে গাড়ি অথবা সিএনজি করে গোরকঘাটা বাজার।
নামকরা ক্যাম্পিং স্পট এই সোনাদিয়া
থাকাখাওয়ার সুব্যবস্থা না থাকলেও নিজস্ব আয়োজনে সোনাদিয়া দ্বীপে ক্যাম্পিং করলে বেশ আনন্দমুখর কিছুটা সময় কাটানো যায়। সূর্যোদয় সেই ক্যাম্পিং এ যোগ করে রোমহর্ষক অনুভূতি।
সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমনসূচি
দিন তিনেকের মত সময় হাতে নিয়ে সোনাদিয়া দ্বীপ ঘুরে দেখা যেতে পারে । কক্সবাজার থেকে সোনাদিয়া গিয়ে থাকার ব্যবস্থা করতে করতেই একটি দিন চলে যায়। পরদিন সন্দিয়া দ্বীপ ঘুরে তৃতীয় দিন মহেশখালী এসে আদিনাথ মন্দির, মৈনাক পর্বত এবং আসে পাশের জায়গা ঘুরে কক্সবাজার চলে আসতে পারেন।
ভ্রমণে সচেতনতা
রাত যাপনের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে যেন নিজের জন্য অন্যের কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। ক্যাম্পিং শেষ করে ফেরার পথে জায়গাটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ফিরতে হবে, যেন অন্য কেও সেখানে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়।
Add comment