রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি নামটা আমাদের সকলের কাছে পরিচিত। এটি মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত। কবি তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়েছেন এখানে। ফলে জীবন এবং সাহিত্যের এক বিরাট অংশের সাক্ষী এ কুঠিবাড়ি।
রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ি
কুষ্টিয়া শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে কুমারখালি উপজেলার অর্ন্তগত শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরেশদপুর কুঠিবাড়ি অবস্হিত।
কুঠিবাড়ির ইতিহাস
রবীন্দ্রনাথের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এ অঞ্চলের জমিদারি পান। পরবর্তিতে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে জমিদার হয়ে আসেন। এখানে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেন। এ সময় এখানে বসেই তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি, গীতাঞ্জলী কাব্যের অনুবাদ কাজও শুরু করেন।
কুঠিবাড়ির সৌন্দর্য ও কবির ছায়া
কবি ভবনে ব্যবহার্য জিনিসপত্রগুলোর মধ্যে আরো আছে চঞ্চলা ও চপলা নামের দুটো স্পিডবোট, পল্টুন, ৮ বেহারা পালকি, কাঠের চেয়ার, টি টেবিল, সোফাসেট, আরাম চেয়ার, পালংক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস ।
জাদুঘরের নীচ ও দ্বিতীয় তলায় ১৬টি কক্ষেই কবি রবীন্দ্রনাথ, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, কৃষক বন্ধু রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ নানা বয়সের বিচিত্র ভঙ্গির রবীন্দ্রনাথের ছবি । বাল্যকাল থেকে মৃত্যুশয্যার ছবি পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে । তাছাড়াও রয়েছে শিল্পকর্ম এবং তাঁর ব্যবহার্য আসবাবপত্র দিয়ে পরিপাটি দিয়ে সাজানো।
সবুজের সমারোহে ঘেরা কুঠিবাড়ির পাশেই রয়েছে রবীন্দ্রনাথের নিজ হাতে লাগানো বকুল গাছ এবং পুকুরে পদ্মা বোটের আদলে তৈরি নৌকা। এ ছাড়া ‘গীতাঞ্জলী’, ‘সোনার তরী’ এবং ‘খেয়া’ নামের তিনটি রেস্টহাউজ এবং একটি গ্রন্থাগার রয়েছে কুঠিবাড়িতে। সরকারের প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে।
সরকারের প্রচেষ্টা
১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্হাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত আছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুঠিবাড়িটি গুরুত্ব অনুধাবন করে কবির বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
টিকিট ব্যবস্থা
জনপ্রতি টিকেট এর দাম পনের টাকা করে, কিশোরদের জন্য প্রবেশ মুল্যে নির্ধারন করা হয়েছে ৫ টাকা। অন্যান্য বিদেশী দর্শকদের জন্য টিকেটের মূল্য একশত টাকা করে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে এস বি, শ্যামলী, হানিফসহ বিভিন্ন পরিবহন রয়েছে। বাস শহরের মজমপুর গেট এলাকায় নামিয়ে দেয়। মজমপুর থেকে কুঠিবাড়ি আটোরিকশায় ৪০ টাকা ভাড়া। কুঠিবাড়ি থেকে পাঁচ টাকা ভাড়ায় কাচারিবাড়ি ঘুরে আসা যায়।
[…] তোলেন। লালন ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহের জমিদার বাড়ির ভাল সম্পর্কের উল্লেখ পাওয়া যায় বেশ […]