রামগড়ের দর্শনীয় কিছু স্থান নিয়ে আজ আমরা আলোকপাত করবো। আমরা সকাল ১০ টায় ফেনী রোড থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে ছাগলনাইয়া উপজেলা হয়ে শুভপুর, করের হাট হয়ে যাওয়ার পথে প্রথমে নয় টিলা মাজার দেখতে পায়, সেখানে মাজার পরিদর্শন করি।
রামগড়ের দর্শনীয় স্থান
নয় টিলা মাজার:
এই মাজার পাহাড়ের উপর অবস্থিত। মাজারে প্রবেশের জন্য দুটি আলাদা সিঁড়ি রয়েছে। সাধারণত ডান পাশের সিঁড়িতে উঠে বাম পাশের সিঁড়িতে নামা হয়। মাজারের গেটের পাশে রয়েছে দান করার ব্যবস্থা, আপনারা যারা আসবেন এই দানবাক্সে দান করতে পারেন। এছাড়া মাজারটি পাহাড়ের উপর পাশে রয়েছে সবুজে ঘেরা বিশাল খোলা জায়গা, আর এক পাশে বিভিন্ন পাহাড়ের দৃশ্য দেখা যায়।
মাজার পরিদর্শন এর পর রাস্তায় একটি মনোরম পরিবেশ দেখে বিরতি নিলাম আমরা। যাওয়ার পথে রয়েছে একটি বিজিবি চেক পোস্ট। মনে রাখবেন উক্ত সংরক্ষিত এলাকার কোন প্রকার ভিডিও অথবা ছবি ধারন করবেন না, যা চেক পোস্টে সতর্ক করে দিবে।
এরপর হেয়াকো বাজারের পরে পাবেন ভিন্ন অনুভূতি পাওয়ার একটি অপরুপ সৌন্দর্যের পরিবেশ। যা সেলফি রোড নামে পরিচিত।
সেলফি রোড:
এ রাস্তা জুড়ে দুপাশে রয়েছে অসংখ্য রাবার গাছ যা রাবার বাগানও বলা হয়। এ স্থানে আসার জানতে পারবেন কিভাবে রাবার গাছ থেকে রাবার উৎপাদন করা হয়। আর এ রাস্তায় অবশ্যই আপনি ছবি অথবা সেলফি নিজে থেকে তুলতে বাধ্য হবেন কারন জায়গাটা এতটা সুন্দর যা আপনাকে মুগ্ধ করবে।
এরপর এক অসাধারণ প্রকৃতির রূপের সৌন্দর্য চোখে পড়বে। তা হচ্ছে রামগড় চা বাগানের দৃশ্য। ১,৪০০ একরের বিশাল রামগড় চা বাগান। পঞ্চাশের দশকে স্থাপিত এই চা বাগান থেকে প্রতিদিন ১৬ হাজার কেজি সবুজ পাতা উত্তোলন করা হয়।
বাগানের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে প্রকাণ্ড লেক। শুনেছি এই লেক শীতকালে পরিপূর্ণ থাকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে। দেশের অনেক পাখিপ্রেমী এই সময় ভিড় জমায় এখানে। আপনার পাখিপ্রেমী হওয়ার প্রয়োজন নেই, যদি ন্যূনতম প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে বিমোহিত হয়ে যাবেন এই সৌন্দর্যে। আর এ চা বাগানের মধ্য দিয়ে চলে গেছে ফেনী-খাগড়াছড়ি সড়ক। এই পথে ছুটে চলা হাজারো যাত্রীর দেহ মন প্রাণ জুড়িয়ে দেয় রামগড় চা বাগান।
তারপর দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য রামগড় বাজারে পৌছাই। রামগড় বাজারে কালি মন্দিরের উত্তর পার্শে রাস্তা দিয়ে পশ্চিমে মসজিদের ছোট রাস্তায় যাওয়ার পথে মসজিদের গেটের সামনে রয়েছে একটি হোটেল। সেখানে খবারের মূল্য বেশি নিলেও বাধ্য হয়ে খেয়েছি, কারণ অন্য হোটেল গুলো বন্ধ ছিলো। খাওয়া শেষ করে চলে যাই রামগড় পর্যটন লেকের ঝুলন্ত ব্রীজ দেখার উদ্দেশ্য।
রামগড় ঝুলন্ত ব্রীজ:
এই ঝুলন্ত ব্রীজ টি লেকের মাঝখানে অবস্থিত। এই লেকে প্রবেশ পথে ১ নং গেটে রয়েছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত ভাস্কর্য আর তার পাশে রয়েছে ১৯৫২ ভাষা শহীদের শহীদ মিনার। প্রাকৃতিক পরিবেশ বান্ধব এই দৃষ্টিনন্দন জায়গা সত্যি অসাধারণ। লেকের মাঝখানে দুটি পিলারের উপর তারের মাধ্যমে ঝুলে আছে এই সুদৃশ্য ঝুলন্ত সেতু।
রাইটারঃ প্রান্তু বিশ্বাস
Add comment