Porjotonlipi

মিঠামইন হাওর ভ্রমণ বৃত্তান্ত

মিঠামইন হাওর কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় অবস্থিত। বর্ষাকালে এই হাওর দেখতে যাওয়ার উত্তম সময়। বৃষ্টির পানিতে ভরপুর হয়ে বর্ষাকালে এই হাওরটি অদ্ভুত সুন্দর আকার ধারণ করে। 

অপরূপ সৌন্দর্য্যের মিঠামইন হাওর

মিঠামইন উপজেলার চারপাশে আরও তিনটা হাওর বেষ্টিত উপজেলা রয়েছে। সেইগুলো হচ্ছে নিকলি, অষ্টগ্রাম এবং ইটনা। এই হাওর অঞ্চলে পাঁচ থেকে ছয় মাস অনেক পানি থাকে। বাকি সময়টা পানি না থাকলেও এই হাওর বেষ্টিত জায়গাগুলো অদ্ভুত সুন্দর। 

অল ওয়েদার রোড 

২০১৯ এ মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং ইটনা হাওরের সাথে যুক্ত করা একটি সুন্দর সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এই পথটি প্রায় ৪৭ কিলোমিটার লম্বা। সড়কটির নাম দেওয়া হয়েছে অল ওয়েদার রোড (All Weather Road)। এই সড়কটি হওয়ার পর থেকে মিঠামইন হাওর পর্যটকদের কাছে আর বেশি  জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

ছবি- সংগৃহীত

মিঠামইনে এক সময়  মিঠা বা মিষ্টি রসের খাগড়া গাছের বন ছিল। তা থেকেই এই অঞ্চলের নাম মিঠামইন হয়েছে। 

কিভাবে যাবেন মিঠামইন হাওর 

মিঠামইন যেতে হলে যেতে হবে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে। ঢাকা থেকে বাস এবং ট্রেনে যাওয়া যায় কিশোরগঞ্জ। মহাখালী কিংবা সায়েদাবাদ থেকে বাসে চড়ে কিশোরগঞ্জ পৌঁছে যাওয়া যায় প্রায় ৩ ঘণ্টার মধ্যে। ভাড়া পরবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ভিতরে। আবার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ১৫ তে এগারসিন্দুর ট্রেনেও যাওয়া যায় কিশোরগঞ্জ। ভাড়া শ্রেনীভেদে ১৩০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে। সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা।

কিশোরগঞ্জ বাস স্টেশন বা রেল স্টেশন থেকে ইজি বাইকে চরে প্রথমে যেতে হবে একরামপুর বাস স্ট্যান্ড। সেখান থেকে সহজেই সিএনজি নিয়ে চামড়া ঘাট পৌঁছে যাওয়া যায়। চামড়া ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকাতে করে যেতে হবে মিঠামইন। নৌকা ভাড়া প্রতি ঘন্টা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আর সময় লাগে দেড় ঘণ্টার মতো। এই নৌকা দিয়েই ঘুরে বেড়ানো যায় মিঠামইন হাওর। সারাদিনের জন্যও নৌকা ভাড়া করা যায় এবং সেটা কিছুটা সাশ্রয়ীও হয়। 

মিঠামইনের অন্যান্য দেখার জায়গা 

মিঠামইনে হাওর বাদেও দেখার মতো আর অনেক জায়গা আছে। সেগুলোর মধ্যে পরে দিল্লির আখড়া, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এর বাড়ি, মালিকের দরগা। এই অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী কিছু খেলাধুলা হয়। সেইগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে নৌকা বাইচ। বর্ষার সময় নৌকা বাইচ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে মিঠামইন হাওরে। আগে থেকে খোঁজ নিয়ে রাখলে খেলাটি দেখতে পারবেন। 

মিঠামইনের আশেপাশের এলাকায় দেখার মতো আর কিছু হাওর আছে। সেগুলো ঘুরে দেখতেও বেশ দারুণ। এর মধ্যে পরে নিকলি এবং ইটনা হাওর। 

কোথায় থাকবেন 

মিঠামইনে থাকার মতো তেমন কোন ভালো জায়গা নেই তবে লোকাল কিছু হোটেল আছে। সেই হোটেলগুলার মধ্যে গাঙচিল, রিভার ভিউ, ক্যাসেল সালাম, আল মোবারক ইত্যাদি রয়েছে।তাছাড়া জেলা পরিষদের রেস্ট হাউসেও থাকা যায়। ভাড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকা পরবে। 

কি খাবেন  

মিঠামইনে হোটেল গুলোতে হাওর থেকে ধরা ফ্রেশ মাছ ক্ষেতে পারেন। এ ছাড়ও হোটেল গুলোরে ভাত দিয়ে রেগুলার তরি তরকারী, মুরগি, মাংস পাবেন। তবে মাছ খাওয়াটাই উত্তম। 

হাওর ভ্রমণে সতর্কতা 

হাওরে ভ্রমণ করার সময় সতর্ক থাকতে হবে। কারণ বেশিরভাগ জায়গাতেই পানি অনেক গভীর। নৌকায় উঠে লাইফ জ্যাকেট কাছে রাখুন। সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না। নৌকাতে লাফালাফি করা যাবেনা। নাহলে নৌকা ডুবে যেতে পারে। চেষ্টা করবেন অবশ্যই ছাউনি সহ নৌকা ভাড়া করতে।  

 

 

রায়া

2 comments