Porjotonlipi

মহেশখালী দ্বীপ, কক্সবাজার

কক্সবাজারে গেলে আমাদের সবার প্রধান আকর্ষণ সমুদ্র সৈকত। কিন্তু তাছাড়াও সেখানে আছে ছোট ছোট দ্বীপের মতো আকর্ষণীয় জায়গা যেমন মহেশখালী, সোনাদিয়া, সন্দীপ ইত্যাদি। মহেশখালী দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ। এটি কক্সবাজারের একটি উপজেলা। কক্সবাজার থেকে এই দ্বীপটার দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার।

কক্সবাজার এর মহেশখালী – বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ

কিভাবে কক্সবাজার থেকে মহেশখালী দ্বীপ যাবেন

কক্সবাজার শহর থেকে ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা করে ৬ নম্বর ঘাটে যেতে হয়। সেখান থেকে দুই ভাবে মহেশখালী যাওয়া যায়। সেখানে বড় নৌকা দিয়ে এক ঘণ্টা সময় লাগে দ্বীপে পৌঁছাতে কিন্তু ঘাট থেকে স্পীড বোট দিয়ে খুব সহজেই মহেশখালী চলে যাওয়া যায়। ৭৫ টাকা খরচ করে স্পীড বোটে ১৫ থেকে ২০ মিনিটে পৌছনো যায় গন্তব্যে।

আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে যে এই নৌকা ভ্রমণটা সাগরে নয় তবে বাঁকখালি নামের একটি নদীর উপর দিয়ে। মহেশখালী দ্বীপের তিন দিকে বঙ্গোপসাগর আর এক দিকে নদী। দুপুরের সূর্যের আলোতে আকাশ ও নদীর রঙ একই রকম নীল হয়ে থাকে। যাওয়ার সময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তোলে।

মহেশখালী দ্বীপ ভ্রমণ গাইড

দ্বীপের ঘাট থেকে নেমেই দেখা যায় রিকশা অটোরিকশা এবং ইজি বাইক, যা দিয়ে পুরো মহেশখালী ঘুরে দেখা যায়। চালকরাই এখানে গাইড হিসেবে ঘুরে দেখায়। দ্বীপটি পুরোটাই ম্যানগ্রোভ গাছ দিয়ে ঘেরা। এই ম্যানগ্রোভ গাছগুলোই এই দ্বীপকে বড় ঢেউ এবং ঝড় থেকে বাঁচিয়ে রাখে।

এই দ্বীপে বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় জায়গা আছে। এর মধ্যে থেকে সবচেয়ে বিখ্যাত জায়গা হলো শ্রী শ্রী আদিনাথ মন্দির। এই মন্দিরটি বেশ বড় এবং এখানে হিন্দুরা বাৎসরিকরিকভাবে তীর্থযাত্রায় সমাগম করে। এই মন্দিরটি কয়েকশ বছর পুরানো এবং বেশ সুন্দর।

দ্বীপের স্থানীয় আদি বাসিন্দারা হলো নাথ সম্প্রদায়। তারাই মন্দিরগুলো দেখা শোনা করে এবং যতটুকুই ঐতিহ্য এখন আছে সেটি তারাই সংরক্ষণ করে রেখেছে। বর্তমানে মহেশখালীতে বিভিন্ন বব্যবসায়িক প্রকল্প শুরু হওয়ার কারণে এই দ্বীপটি পরিবেশগত বিপন্নতার সম্মুখীন হয়েছে।


স্থানীয় মানুষ

এইখানের মানুষের মুল জীবিকা মাছ ধরা, লবন চাষ ও মিষ্টি পান চাষ। মহেশখালী মিষ্টি পানের জন্য বিখ্যাত। সারা বছর মিষ্টি পান চাষহয় এবং বছরে অনেক টাকার পান রপ্তানি হয়। পুরো দ্বীপ জুরে পাণের ক্ষেত ও লবনের কারখানা।

সাগর এবং নদীর লবনাক্ত পানি থেকে মহেশখালীর মানুষ বছরে ছয় মাস লবণ উৎপাদন করে আর বাকি ছয় মাস মাছ-কাঁকড়া চাষ করে থাকে। এখানে আদিবাসীরা বিভিন্ন ধরনের কাপড় বুনে পর্যটকদের কাছে বিক্রয় করে।

সিম্পেল লাইফ অফ মহেশখালী

মহেশখালীর ছোট বড় পাহাড় সবুজে ভরা। পাহার কেটে ছোট রাস্তাও আছে ট্রেকিঙের জন্য। উঁচুতে উঠে পুরো দীপটা দেখা যায়। আবার উঁচু থেকে সোনাদিয়া দ্বীপও দেখা যায়।

মহেশখালীর ভিতরের ছোট গ্রামগুলোও ঘুরে দেখা যায় এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাপন দেখা যায়। সেখানের মানুষ খুবই সাধারন এবং সুন্দর জীবনযাপন করে। মহেশখালী দ্বীপ একটি শান্তির জায়গা যেখানে নেই তেমন জন সমাগম কিংবা কোলাহল- শুধু সবুজ পাহাড় এবং নীল সাগর।

আর অবশ্যই মনে রাখবেন, ভ্রমণকালীন সময়ে পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ করবেন না এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে খারাপ আচরণ করবেন না। নিজে ভ্রমণ করুন এবং অন্যকে ভ্রমণ করার সুযোগ করে দিন।

কন্টেন্ট রাইটারঃ রায়া

 

Porjotonlipi

Add comment