অভিজাত প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট বাংলাদেশের ভ্রমণ / পর্যটনের ক্ষেত্রে এখন বেশ আলোচিত একটি বিষয়। কথায় আছে “মানুষ সুন্দরের পুজারী”। এ কথাটির সত্যতা প্রমাণের জন্যেই যেন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে সৌন্দর্যপ্রেমীদের সংখ্যা।
হাওর অঞ্চলে অভিজাত প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট
তবে সেই সৌন্দর্যের সুধা পানের সাথে যদি যুক্ত হয় ভ্রমণের সুযোগ তাহলেতো আর কোন কথাই নেই। ভ্রমণের নেশা আর সৌন্দর্যের রূপ-সুধা আস্বাদনের সুযোগ যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে পর্যটকের হৃদয়কে নিয়ে যাবে এক ভিন্ন জগতের পথে।
অভিজাত প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট লোকেশন
কিশোরগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত হাওড় অঞ্চল ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামের মিঠামইন উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের দক্ষিণের হাওরে সুবিশাল জলরাশির বুকে প্রায় ৩০ একর জায়গা নিয়ে তৈরি দীর্ঘ লেকের চারপাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক এক অবকাশ যাপন কেন্দ্র। যার নাম ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’। হাওরে এই প্রথম পর্যটকদের আবাসন সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি অসাধারণ সৌন্দর্য্যে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে একই সাথে নান্দনিক ও অত্যাধুনিক এই রিসোর্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। পাখির চোখে দেখলে যাকে অনেকটা দ্বীপের মতো দেখায়। হাওড় অঞ্চলের প্রথম বানিজ্যিক রিসোর্ট হিসেবে এই বর্ষা মৌসুমেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে রিসোর্টটি।
রিসোর্টের নান্দনিকতা
বর্ষা মৌসুমে প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের নান্দনিক কটেজগুলোর দক্ষিনে প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ জলরাশি রিসোর্টে আগত হাওড় প্রেমীদের চোখ জুড়াবে। রিসোর্টের কটেজগুলো থেকেই উপভোগ করা যাবে এই নান্দনিক দৃশ্য।
কি রয়েছে রিসোর্টটিতে
অত্যাধুনিক এ রিসোর্টে রয়েছে ১০টি আবাসিক ডুপ্লেক্স কটেজ, যার প্রতিটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। দু’তলা বিশিষ্ট এসকল কটেজে ৪০টি পরিবার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে অত্যাধুনিক পার্টি সেন্টার (আউটডোর), বিশাল ক্যান্টিনে ৪ শতাধিক লোকের একত্রে খাবারের ব্যবস্থা। ইনডোরে রয়েছে চাইনজি ও বাংলা রেস্টুরেন্ট। লেকের পাশে রয়েছে কালচারাল সেন্টার, সাইট লিংক, গলফ কার রাইডিং, লেকের মাঝখানে হেলিপ্যাড নির্মাণের কাজ চলছে। মাছ ধরার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক চৌকি। অনুমানিক ৫ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। রয়েছে সবজি বাগান। গাছের মাঝখানে শিশুদের জন্য খেলার সামগ্রীসহ ২০টি ছাতা রয়েছে। বিভিন্ন কারুকার্যে খচিত পাথরের মাছ ,বাঘ, সিংহও রয়েছে। ৫ তলা ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে লেকের পশ্চিম পাশে। মনোরম পরিবেশে লেকের দু’পাশে অত্যাধুনিক দুটি সিড়ি ঘাট রয়েছে। সুদৃশ্য পাইপের ভিতর ৪ জন পর্যটক বসার মত জায়গা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে সুইমিং প্লটিং, পেডেল বোট, জেট স্কী ওয়াটার বাইক, শিশুদের জন্য কিডস কর্নার। বর্ষাকালে যাতায়াতের জন্য দুটি অত্যাধুনিক ট্রলার ও ৩টি স্পিড বোট রয়েছে।
সহযোগীতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
রিসোর্টে আগত পর্যটকদের সার্বিক সহযোগীতার জন্যে রিসিপশনসহ বিভিন্ন বিভাগে রয়েছে মোট ৮০ জন স্টাফ। তাছাড়া সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য সিকিউরিটি এজেন্সির ১০ জন নিরাপত্তা কর্মীও রয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে।
এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ
প্রতিদিনের ব্যস্ত সূচীতে ঠাসা এই নাগরিক জীবনের একঘেয়েমিকে দুর থেকে আরও দুরে ঠেলে সরিয়ে দিতে এই হাওর বিলাস হতে পারে একটি মোক্ষম সুযোগ। কেননা এখানে এলে একই সাথে হাওর দর্শন ও ভ্রমণের আনন্দ দুটোই উপভোগ করা যাবে, যেটার সুযোগ বাংলাদেশে খুব কমই রয়েছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
বর্ষাকালে কিশোরগঞ্জের হাওরের গেট নামে পরিচিত চামড়া বন্দর ও বালিখলা থেকে রিসোর্টে নিজস্ব ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও স্পিড বোট রয়েছে। পর্যটকরা সেখানে আসা মাত্রই রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগযোগ করলে যানবাহন চলে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অল ওয়েদার সড়ক থেকে ২ কিলোমিটার পূর্ব পাশে হাওরের মাঝখানে নান্দনিক এ রিসোর্টে বর্ষাকালে ইঞ্জিন চালিত বোট নিয়ে আসার ব্যবস্থাও রয়েছে। শুকনো মৌসুমে পর্যটকরা গাড়ি নিয়ে রিসোর্টের ১ নং গেট পর্যন্ত আসতে পারবেন।
কন্টেন্ট রাইটার- ফাহিম সাদেক সৌরভ
Add comment