Porjotonlipi

প্রাচীন পানাম নগর

ঐতিহ্যবাহী পানাম নগর নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। মায়াবি পর্দা দুলে ওঠার মতো মসলিনের পর্দা, ঋতু ভিত্তিক বিভিন্ন পূজো উৎসবে মূখর নগরী আবহমান বাঙ্গালীর লোকাচার, জীবনাচার, আবহমান জীবন সংস্কৃতির এক জীবন্ত দলিল ছিল পানাম নগর।

নান্দনিক প্রাচীন শহর পানাম নগর

নারায়ণগঞ্জ জেলার, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর হল পানাম নগর । এটি সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন জাদুঘর হতে ০.৫ কি.মি. উত্তরে অবস্থিত।

 

Panam1

পানাম নগর এর পূর্ব গল্প

“পাইনাম’’ ফার্সি শব্দ। পাইনাম থেকে পানাম। অর্থ আশ্রয়। ধারনা করা যেতে পারে ঐতিহাসিক ‘‘সড়কে-ই-আযম’’ গ্রান্ড ট্রাংঙ্ক রোডের সমাপ্তি এ পানাম নগরেই হয়েছিল। পানাম বাংলাদেশের চারশত বছর প্রাচীন বাংলাদেশের নগর ভিত্তীক একটি প্রাচীন নগরীর মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এর প্রাচীনত্ব আরো গভীর হতে পারে। পানাম নগরী ‘‘সরকার-ই-সোনারগাঁওয়ের’’ পরগনার হেড কোয়ার্টার হিসেবে ও বিবেচিত। পানামের প্রাচীনত্ব বহন করে ট্রেজারার হাউস, সেতু, কোস্পানীর কুঠি এবং প্রাচীন বনেদি ইমারত সমূহ।

 

Panam2

শিল্প ও নান্দনিক চিত্র

লোকজ শিল্প সমৃদ্ধ নান্দনিক ফুল, লতাপাতা সম্বলিত দেয়াল, চিত্রিত চারুতায় ভরপুর মায়াবি নাচঘরকে কেন্দ্র করে লোকজ গানের আসর বসতো। সোনারগাঁয়ের নান্দনিক চারু ও কারু শিল্পের জন্যে বিখ্যাত মসলিনের আড়ং ছিল পানাম নগর। পানাম নগরের বিভাশিত বর্নাঢ্য-ইমারত সমূহ স্বাক্ষ্য দেয় একসময় সোনারগাঁয়ের অভিজাত নাগরিকদের বসবাসের কেন্দ্র ছিল। লোকজ উপাদানের মোটিভ সম্বলিত একচালা দোচালা ছনের ঘরের মডেল সম্বলিত ইমারত, বঙ্গীয় ‘‘একচালা দোচালা গৃহায়ন’’ সংস্কৃতির আদল রূপে সুদূঢ় দিল্লীতে সমাদৃত হয়েছিল এ থেকে কী আমরা ধারনা করতে পারিনা প্রাচীন এ সোনারগাঁয়ের ছনে ছাওয়া কুড়ে ঘরের আদলই মোগল শিল্পকলাকে উৎসাহিত করেছিল। এসবেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল সোনারগাঁয়ের পৃথিবীখ্যাত নান্দনিক চারু ও কারুশিল্পর জন্যে।

গোয়ালদি মসজিদ

লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন থেকে কাছেই অবস্থিত গোয়ালদি মসজিদ। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের সময়কালে মোল্লা হিজাবর আকবর মসজিদটি নির্মাণ করেন।

 

Panam3

কিভাবে যাবেন পানাম নগর

আপনাকে ঢাকা হতে বাসযোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সোনারগাঁ মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ড নামতে হবে। অত:পর রিক্সা/সিএনজি যোগে চলে যান পানাম নগর যার মোট দূরত্ব ২৭ কি.মি।

সতর্কতা ও প্রবেশ ফি

জাদুঘর প্রবেশ করতে প্রত্যেকেই টিকিট কাটতে হবে এবং টিকিট মূল্য ৩০ টাকা । এই শহরটি বেশ পুরনো হওয়ায় কিছু ভবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আর সেইসব জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন । সপ্তাহে দুই দিন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) জাদুঘর বন্ধ থাকে ।

কন্টেন্ট রাইটারঃ তাসনিয়া মাহবুব তৈশী

 

 

Porjotonlipi Desk

Add comment