Porjotonlipi

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ও তার সৌন্দর্য্য

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সহ বাকি দুই পার্বত্য জেলা পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা আর পাহাড়ি সৌন্দর্য্যে মন হারায়নি এমন মানুষ হয়তো খুব কমই পাওয়া যাবে। পাহাড়ের সহজ সরল মানুষ আর তাদের আতিথেয়তায় যে কারোই মন চাইবে বারবার ছুটে যেতে সেখানে।

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি

তিন পার্বত্য জেলার মাঝে খাগড়াছড়িতে আমরা অনেকেই গিয়েছি এবং এর দর্শনীয় স্থানগুলোও আমাদের বেশ পরিচিত। তাই আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব এই জেলার কিছু অজানা ইতিহাস, সাথে এই জেলার কিছু সৌন্দর্য্য।


Khagrachori

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ও তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। খাগড়াছড়ির প্রাচীন নাম ছিল ‘তারক’। খাগড়াছড়ি নদীর দু’পাড়ে গভীর নল খাগড়ার বন ছিল। এই নল খাগড়ার বন থেকেই ‘খাগড়াছড়ি’ নামের উৎপত্তি। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে উঠে, ফলে তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।

ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত অত্র এলাকাটি কখনো ত্রিপুরা, কখনো বা আরকান রাজন্যবর্গ দ্বারা শাসিত হয়েছে। তন্মধ্যে ৫৯০ হতে ৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মোট ৩৬৩ বছর ধরে ত্রিপুরা রাজাগণ বংশপরম্পরায় পার্বত্য চট্টগ্রাম (খাগড়াছড়িসহ) ও চট্টগ্রাম শাসন করে। অতঃপর ৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১২৪০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আরকান রাজাগণ ২৯৭ বছরব্যাপী এ এলাকা শাসন করলেও তদ্পরবর্তীতে ১০২ বছরব্যাপী (১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত) পুনরায় ত্রিপুরা রাজাগণ এ এলাকার কর্তৃত্ব করেন।

ইতিহাসসূত্রে জানা যায় দশম শতাব্দী থেকে পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত ত্রিপুরা রাজাগণ ০৮ (আট) বার, আরাকান রাজাগণ ০৯ (নয়) বার এবং গৌড়ের সুলতানগণ (মুসলিম) ০৬ (ছয়) বার এ এলাকাটি দখলে নেন। অবশেষে ১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ হতে ত্রিপুরা রাজার শাসন ক্ষমতার আওতা হতে মুসলিম শাসক সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ চট্টগ্রামসহ এ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন।

মুসলিম শাসনের ধারাবাহিকতায় ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক বাংলার মসনদ দখল পরবর্তীকালে নবাব মীর কাশিম আলী খানের রাজত্বকালে ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার নবাব মীর কাশিমের করতল থেকে চট্টগ্রাম অধিকার করেন। অতঃপর ১৭৬১ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারী ব্রিটিশ সরকারের সাথে স্বাধীন ত্রিপুরা মহারাজার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে ত্রিপুরা রাজার পরাজয়ের প্রেক্ষিতে উভয়ের মধ্যে এক চুক্তি সম্পাদিত হয়।


Golden-Temple-Khagrachori

দর্শনীয় স্থানসমূহ এবং তাদের অবস্থান

১. আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র

পর্যটন কেন্দ্রটি খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্বে অবস্থিত হওয়ায় বাস, ট্যাক্সিযোগ যাতায়াত করা যায়।

আলুটিলার ঝর্ণা বা রিছাং ঝর্ণা মহাসড়ক হতে হেরিংবোন রাস্তায় জীপ, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস বা পায়ে হেঁটে যাতায়াত করা যায়।

২. আলুটিলার সুড়ঙ্গ বা রহস্যময় সুড়ঙ্গ

পর্যটন কেন্দ্রটি খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্বে অবস্থিত হওয়ায় বাস, ট্যাক্সিযোগ যাতায়াত করা যায়। এই সুড়ঙ্গটি দিয়ে যেতে যেতে আপনি নানান ধরনের থ্রিল উপভোগ করতে পারবেন।

৩. দেবতার পুকুর (দেবতার লেক)

খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কে জেলা সদর থেকে ১১কিঃ মিঃ দক্ষিণে মূল রাস্তা হতে ৪কিঃ মিঃ পশ্চিমে সদর উপজেলার নূনছড়ি মৌজায় চির প্রশান্তিময় দেবতার পুকুরের অবস্থান। স্থানীয় মতানুসারে এখানে এক সময় এক দেবতার বসবাস ছিল এবং তিনি এখানে স্নান করতেন।

৪. শান্তিপুর অরণ্য কুটির

পানছড়ি পর্যন্ত পাকা রাস্তা, চেঙ্গীব্রীজ পার হবার পর কিছু অংশ পাকা বাকী অংশ হেরিংবোন। পানছড়ি পর্যন্ত বাসে, অতঃপর কার, জীপযোগে যাওয়া যায়।

৫. বিডিআর স্মৃতিসৌধ

বিডিআর এর জন্ম সম্পর্কিত ঐতিহাসিক স্থানটি রামগড় উপজেলা পরিষদের পাশে ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।


Khagrachori2

৬. মায়াবিনী লেক

খাগড়াছড়ি হতে সরাসরি সিএনজি যোগে পানছড়ি  উপজেলা অধীন ভাইবোনছড়া হয়ে মায়াবিনী লেক যাওয়া যায়। মায়াবিনী লেকের সৌন্দর্য্য দেখে যেকেউই এই লেকের মায়ার পড়তে বাধ্য।

৭ . জেলা পরিষদ পার্ক

খাগড়াছড়ি সদর বাসস্ট্যান্ড হতে সিএনজি  যোগে/ টমটম যোগে সরাসরি জেলা পরিষদ পার্ক যাওয়া যায়।

৯. ডিসি পার্ক

খাগড়াছড়ি হতে সরাসরি বাসযোগে/ সিএনজি  যোগে মানিকছড়ি উপজেলা গিয়ে মানিকছড়ি বাসস্ট্যান্ড হতে সরাসরি টমটম /সিএনজি  যোগে ডিসি পার্কে  যাওয়া যায়

বিশ্রামঃ

নিম্নে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা অবস্থিত কিছু সরকারি এবং বেসরকারি হোটেলের বিবরণ দেওয়া হলো।পর্যটক যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই তাদের সাথে কথা বলে নিবেন।

ডাকবাংলো জেলা পরিষদ, খাগড়াছড়ি মহালছড়ি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ডাকবাংলোটি অবস্থিত। এটি জেলা পরিষদ কর্তৃক একটি এনজিও সংস্থাকে বর্তমানে ভাড়া দেওয়া হয়েছে মর্মে জানা যায়।

পর্যটন মোটেল এ কে এম রফিকুল ইসলাম           পর্যটন মোটেল, খাগড়াছড়ি সদর, খাগড়াছড়ি ।      ০১৭১৫৭১২১৮৯

হোটেল নিরিবিলি           মো: মীর হোসেন           মানিকছড়ি বাজার সড়কস্থ আকাশপুরি নামক স্থানে মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নে অবস্থিত, মোবাইল নং- ০১৮১৩৩৪৩৮৫১, ০১৮২০৭১৪৪৪২।       ০১৮১৩৩৪৩৮৫১, ০১৮২০৭১৪৪৪২

হোটেল গাইরিং  জনাব এস. অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা সাং-মিলন পুর, ৭নং পৌর ওয়ার্ড, সদর উপজেলা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। ০১৮১৫১৬৩১৭৩, ০১৫৫৪৩১৯৯৪৭

আবাসিক হোটেল দার আল হিজাজ           মোঃ মুজাহের    পানখাইয়া পাড়া সড়ক, কপি হাউজের নিকটে, খাগড়াছড়ি বাজার, খাগড়াছড়ি সদর, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা।            ০১৯৫১০৫১২০৬, ০১৭৮৬৯১০৫১৩

হোটেল ইকোছড়ি ইন     মোঃ সেলিম       হোটেল ইকোছড়ি ইন, খাগড়াপুর, ক্যান্টনমেন্ট এর পূর্ব গেইট, সদর, খাগড়াছড়ি।   ০১৮২৮৮৭৪০১৪

হোটেল হিল প্যারাডাইস মোঃ সেলিম       সেলিম ট্রেড সেন্টার, আদালত সড়ক, খাগড়াছড়ি সদর, খাগড়াছড়ি।   ০১৭৫৪৯৩৩০৭৬, ০১৬৪৭৪৭৮১৪৯

গাংচিল আবাসিক হোটেল      রনজিৎ মহাজন     আশা কমপ্লেক্স, কলেজ রোড, নারিকেল বাগান, খাগড়াছড়ি      ০১৮৭৮৩৩৮২১৮, ০৩৭১৬১২৩৩

হোটেল রাজু (আবাসিক)      ওসমান গনি       নারিকেল বাগান, কলেজ রোড, খাগড়াছড়ি  ০১৫৫০৬০৬০৫৬, ০৩৭১৬১১৬১

বর্ন রিসোর্ট (আবাসিক)      অজিত কুমার দেব   কলেজ রোড, নারিকেল বাগান, খাগড়াছড়ি  ০১৮১৫৬০০৪৯৮, ০৩৭১৬১২২২

হোটেল মাউন্ট ইন (আবাসিক)  মোঃ আনোয়ার হোসেন কলেজ রোড, নারিকেল বাগান, খাগড়াছড়ি  ০১৮৬৪৮৩০৮০০, ০৩৭১৬২৮২৮

অরন্য বিলাস (আবাসিক হোটেল) স্বপন চন্দ্র দেবনাথ   কলেজ রোড, নারিকেল বাগান, খাগড়াছড়ি  ০১৭৬৫৮০৪৯৪৯, ০৩৭১৬২৫২৬

হোটেল গেস্ট হাউজ খাগড়াছড়ি (আবাসিক) মোঃ তাহেরুল ইসলাম (তাহের)  কলেজ রোড, মহাজন পাড়া , খাগড়াছড়ি

 

Porjotonlipi Desk

Add comment