Porjotonlipi

করোনায় যাত্রাপথে সচেতনতা

যাত্রাপথে সচেতনতা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর সংক্রমণে ভাটা পড়েছে অন্যান্য সব কিছুর মত ভ্রমণ শখেও। কিন্তু জীবনযাত্রার প্রয়োজনে বেড়াতে না গেলেও যাওয়ার দরকার পড়ছে অনেক জায়গাতেই।

যাত্রাপথে সচেতনতামূলক ৫টি পদক্ষেপ

যার কারণে বেড়ে যাচ্ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। কিন্তু যাত্রাপথে সচেতনতা ও সহজ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই এড়িয়ে যাওয়া যায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোঁয়া থেকে। আসুন জেনে নেই কিভাবে যাত্রাকালে ৫টি ধাপ অবলম্বন করে নিরাপদ থাকা যায়। 

১। গন্তব্য সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ

যে স্থানে ভ্রমনের জন্য যাওয়া হবে, সে জায়গাটি নিরাপদ কিনা, সে ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সে জায়গায় প্রতিদিন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা, প্রতিদিন কতজন রোগী এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হচ্ছে, শতকরা কতজন আক্রান্ত, ইত্যাদি। খেয়াল রাখা প্রয়োজন নির্ধারিত এলাকার প্রতি ১০০,০০০ জনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা যেন সর্বনিম্ন ৪ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

২। যাত্রা মাধ্যম সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা  

আমরা অনেকেই ভ্রমণের জন্য আকাশ পথ, রেলপথ সহ অনেক পথকে বেছে নেয়। আমাদের যাত্রা যেন সুবিধাজনক হয়, সেটা নিশ্চিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে অনেক কর্মী। আমরা অধিকাংশ যাত্রীই যাত্রার জন্য সড়কপথকেই বেছে নেই। সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে আমরা যেন অতি প্রয়োজনীয় জিনিস পর্যাপ্ত পরিমানে সাথে রাখি যেমন- পানীয়, শুকনা খাবার, টিস্যু পেপার, ফেস মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার (যাতে অ্যালকোহলের পরিমাণ কমপক্ষে ৬০%), এবং সড়ক যাত্রায় যেন ঘন ঘন বিরতি না নেয়া হয়। আকাশ এবং রেলপথে বিরতির পরিমাণ না থাকলেও মানতে হবে সতর্কতা পদক্ষেপ, বাধ্যতামূলকভাবে পরিধান করতে হবে এন-৯৫ সহ যেকোনো প্রকার ফেস মাস্ক। যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন মাস্ক খোলা না হয়, সে বিষয়ে সতর্কতা মানতে হবে।

৩। পরীক্ষাকরন এবং সঙ্গরোধ

যাত্রা পথের তালিকায় ভাইরাস পরীক্ষাকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যাত্রার শুরুতে এবং শেষে ফার্মেসি, হাসপাতাল কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে বিমানবন্দর কিংবা রেল স্টেশন থেকে কোভিড পরীক্ষা করা যেতে পারে। যদি কোন ভিড়ভাট্টা কিংবা কোন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গেলে সর্বসাধারনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞদের এর পরামর্শ অনুযায়ী ১৪ দিন হোম-কোয়ারেন্টাইন বা লোকসঙ্গ সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে একটি কক্ষে থাকা। এতে করে ভাইরাসের ছড়ানোর আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়।

৪। যতটা সম্ভব, লোকসমাগম এড়িয়ে চলা

ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়ায়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিমিত্তে মানুষের চলাচল যেখানে সবচেয়ে কম, সেই জায়গা বেছে নেয়া। সবচেয়ে ভালো হয়, ঘনবসতি শহর এড়িয়ে চলা। কারণ এই করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে এমনিতেও কনসার্ট হল, জাদুঘর সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান এমনিতেও বন্ধ থাকবে।

৫। হোটেলসহ অন্যান্য আবাসিক স্থানে নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করা

বাহিরে গিয়ে যেসব আবাসিক স্থানে থাকা হবে, সেখানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। খাবারঘর সহ বিভিন্ন কমন রুমে সামাজিক দূরত্ব কড়াকড়ি ভাবে মানতে হবে। কাছাকাছি দূরত্বে হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে কিনা, দেখতে হবে। বহুল ব্যবহৃত জিনিস যেমন টিভির রিমোট কন্ট্রোল, দরজার তালা নিয়মিত অ্যালকোহল প্যাড দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। হোটেলে নির্দিষ্ট সময় পরপর রুম সার্ভিসের সেবা নিতে হবে এবং অপরিচিত মানুষের থেকে যতটুক সম্ভব দূরত্ব বজায় চলতে হবে। 

সামান্য এই পদক্ষেপ গুলো মেনে চলতে অনীহা দেখানোর দরুন দেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে, সাথে যোগ হচ্ছে মৃত রোগীর সংখ্যা। কিন্তু একটু সচেতন হলেই দূরে থাকা যায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোবল থেকে। অতি সাধারন এই পদক্ষেপ গুলো মেনে চলি, নিজে সহ নিজেদের প্রিয়জনদের এই ব্যাপারে সচেতন করি। 

কন্টেন্ট রাইটারঃ ফাতেমা নজরুল স্নেহা

 

 

Porjotonlipi

Add comment