যে কোন রাজবাড়ী একটা গল্প ব্যাখ্যা করে আর সেই গল্প সূত্রে রাণী ভবানী রাজবাড়ী নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। প্রকৃতপক্ষে রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত সমগ্র নাটোর শহরটাই মহারাণী ভবানীর।
রাণী ভবানী রাজবাড়ীর ইতিহাস
সম্ভবত ১৭০৬ ইং থেকে ১৭১০ ইং সালের মধ্যে নাটোর রাজবাড়ী নির্মিত হয়েছিল। রামজীবনের জমিদারীর রাজধানী নাটোরে স্থাপনকে কেন্দ্র করে অনেক বিচিত্র জনশ্রুতি আছে।
৪৯.১৯২৫ একর জমির ওপর নাটোর রাজবাড়ী বা রাণী ভবানী রাজবাড়ী নির্মিত হয়েছিল। রাজা রামজীবন নাটোর রাজবাড়ীর প্রথম রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন ১৭০৬ মতান্তরে ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন এবং সে বছরেই মৃত্যুবরণ করেন। রাজা রামজীবনের মৃত্যুর পর রামকান্ত ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দে নাটোরের রাজা হন। অনেকের মতে ১৭৩০ থেকে ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজা রামজীবনের দেওয়ান দয়ারাম নাটোরের তত্ত্বাবধান করতেন। রাজা রামকান্ত তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নাটোরের রাজত্ব করেন।
যেমন মায়ের আদেশে রাজা রামজীবন ও রঘুনন্দন নিজ জন্মভূমিতে রাজধানী স্থাপনের জন্য উপযুক্ত একটি স্থানের সন্ধান করতে থাকেন। এক বর্ষাকালে রঘুনন্দন, রাজা রামজীবন ও পন্ডিতবর্গ নৌকারোহনের সুলক্ষণযুক্ত পরিবেশে রাজধানী স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে বের হন। ঘুরে ঘুরে তারা ভাতঝাড়া বিলের মধ্যে উপস্থিত হন। বিলের একটি স্থানে তারা দেখতে পেলেন যে, দু’টি সাপ সাঁতার দিয়ে বিল পার হচ্ছে এবং একটি ব্যাঙ ছোট একটি সাপকে গিলে খাচ্ছে। পন্ডিতবর্গ উক্ত স্থানকেই রাজধানী নির্মাণের স্থান হিসাবে উপযুক্ত বলে মত প্রকাশ করায় তারা সেখানেই রাজবাড়ি নির্মাণ করবেন বলে স্থির করেন। রাজবাড়ি নির্মাণ করার পর রাজ-আমলা, কর্মচারী বহুবিধ লোকের সমাগমে অল্পদিনের মধ্যে বিলটি একটি শহরে পরিণত হয়। সেই পরিণত শহরই নাটোর।
আকর্ষণ ও সৌন্দর্য
পুরো রাজবাড়ি ঘিরে আছে বিশাল সব গাছ। রয়েছে নানা জাতের ফুলগাছ। পাশেই নবনির্মিত কমিউনিটি সেন্টার। আরেকটু সামনে এগিয়ে ডান দিকে বিশাল মাঠ। মাঠের বিশাল প্রান্তরে দাঁড়ালেই চোখে পড়বে রাজবাড়ির একতলা ভবনটি। এই অংশের নাম ছোট তরফ। এর ঠিক উল্টো দিকে বড় তরফ। এখানে একটি অতিথিশালা আছে, নাম মাত্র।চলতি পথে দেখা গেল ছোট তরফের একটি ভবনের নাম হানি কুইন ভবন।রাজবাড়ির আঙিনায় রয়েছে বিশাল বিশাল আটটি শিব মন্দির। মন্দিরগুলোতে এখনো রীতি মেনে নিয়মিত পূজা-অর্চনা করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এই মন্দিরগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
রাজবাড়ির উল্লেখযোগ্য মন্দিরগুলো হলো- শ্যামসুন্দর মন্দির, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দির, তারকেশ্বর শিব মন্দির। মন্দিরের দেয়াল জুড়ে রয়েছে প্রাচীন টেরাকোটার শিল্পকর্ম। মন্দিরকে ঘিরে আছে একটি শিবমূর্তি, ফণা তোলা সাপের মূর্তি, একজন বাউলের মূর্তিসহ নানা রকমের শৈল্পিক কারুকাজ। ওপরে ওঠার জন্য প্রতিটি ভবনের পাশেই রয়েছে লোহার তৈরি ঘোরানো সিঁড়ি।
[…] সালে বাংলার দানশীলা শাসনকর্তা রানী ভবানীর রাজত্বকালে কাঁচাগোল্লার সুখ্যাতি দেশ-বিদেশে […]